মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

সেবা দিয়েও টাকা পায় না সিসিক, বকেয়া শত কোটি টাকা

তরফ নিউজ ডেস্ক: সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেও বিল পরিশোধ করছেন না নাগরিকরা। নাগরিকদের কাছে শতকোটি টাকা বিল বকেয়া পড়ে আছে সিসিকের। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৭ কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদই বকেয়া পড়ে আছে। বিল অনাদায়ী পড়ে থাকার জন্য সিসিক কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের একটি অংশের অবহেলা ও অনীহাকে দায়ী করছে। তবে বিল আদায়ে নগর কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও ভোটের বিবেচনায় বিল আদায়ে কঠোর না হওয়াকেও দায়ী করেছেন অনেকে।

তবে নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিল খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানের দুইদিনে ১৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। বকেয়া টাকা উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন নগর কর্তারা।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ শাখা সূত্রে জানা যায়, সিসিকের শতকোটি টাকা বিল নাগরিকদের কাছে বকেয়া পড়ে আছে। এরমধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ ৬৭ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ২০ কোটি টাকা, পানি বাবদ ১২ কোটি টাকা ও বিলবোর্ড বাবদ ১ কোটি টাকা অন্যতম।

গত জুনে ঘোষিত সিসিকের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে হোল্ডিং ট্যাক্স ১৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর কর ৮ কোটি টাকা, ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের উপর কর ২ কোটি টাকা, পেশা ব্যবসার উপর কর ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপনের উপর কর ১ কোটি টাকা, পানির সংযোগ লাইনের মাসিক চার্জ বাবদ ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পানির লাইনের সংযোগ ও পুনঃসংযোগের ফি এক কোটি টাকা, নলকূপ স্থাপন অনুমোদন ও নবায়ন ফি ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয় ধরা হয়।

তবে বাজেটে আয় হিসেবে ধরলেও বাস্তবে এর বড় অংশই বকেয়া পড়ে আছে। সেবা প্রদানের পর বিল না পাওয়ায় নগরীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র। বার বার নোটিশ প্রদান সত্বেও বিল পরিশোধ না করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি। চলমান অভিযানে বকেয়া পরিশোধ না করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন মেয়র।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই সিসিকের বিভিন্ন সেবার বিল ও কর বকেয়া পড়ে আছে। আগে রাজনৈতিক ও ভোটের বিবেচনায় এসব বকেয়া আদায়ে তেমন তৎপরতা দেখায়নি নগর কর্তৃপক্ষ। ফলে বাড়তে থাকে বকেয়ার পরিমাণ।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সেবাবাবদ নগরবাসীর কাছে শত কোটি টাকার উপরে বিল বকেয়া পড়ে আছে। বারবার নোটিশ প্রদান, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরও বকেয়া আদায় হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বকেয়া টাকা আদায়ে এখন আরও কঠোর হয়েছে সিসিক।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মূল আয়ের খাতে এতো বিশাল পরিমাণ বকেয়া থাকার কারণে সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। নগরবাসী নিয়মিত বকেয়া পরিশোধ করলে আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারব।

বকেয়া টাকা আদায়ে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও অনেকেই বকেয়া বিল পরিশোধ করেননি। ফলে টাকা আদায়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিসিকের সচিব মো. বদরুল হক, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবরকে প্রধান করে গঠিত এসব কমিটি প্রতিদিন বকেয়া টাকা আদায়ে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে অভিযান শুরু হয়েছে।।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com